স্বদেশ ডেস্ক:
‘মাদার হিরোইন’ নামে এক রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের প্রচলন ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে। এখন আবার সেটি চালু করতে যাচ্ছে রাশিয়া। ১০ সন্তান জন্ম দেয়া প্রত্যেক রুশ নারীকে এ খেতাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এমন প্রত্যেক রুশ নারী ১০ লাখ রুবল পুরস্কার, সেইসাথে তাকে দেয়া হবে রাশিয়ার পতাকা খচিত একটি স্বর্ণপদক।
নিম্ন জন্মহারের কারণে বছরের পর বছর ধরে কমছে রাশিয়ার জনসংখ্যা। দম্পতিদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহ দিতেই সোভিয়েত আমলের এই পুরস্কার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ বিষয়ক একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন।
‘মাদার হিরোইন’ পুরস্কার পেতে হলে দশটি সন্তানের জন্ম দিতে হবে একজন রুশ নারীকে। দশম সন্তানের এক বছর বয়স হওয়ার পরই পুরস্কারের টাকা একসাথে ওই মাকে দিয়ে দেয়া হবে।
তবে পুরস্কার পাওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে – প্রত্যেক সন্তানকে সুস্থ এবং জীবিত থাকতে হবে। অবশ্য, কোনো সন্তান যদি সন্ত্রাসী হামলা বা সশস্ত্র সংঘাত ও যুদ্ধে মারা যায়, সেক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হবে।
রুশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল বিষয় খতিয়ে দেখার পরই দেয়া হবে ওই ১০ লাখ রুবল যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে, ১৯৪৪ সালে সোভিয়েত রাশিয়ায় নারীদেরকে বেশি বেশি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছিল।
বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ার আয়তন ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৪৬ বর্গকিলোমিটার, কিন্তু জনসংখ্যা মাত্র ১৪ কোটি ৬০ লাখ ৬৭ হাজার ১৮৩ জন।
মহামারির গত দুই বছরে রাশিয়ায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৬২ জনের। তারপর ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে অন্তত ১৫ হাজার রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের। এ যুদ্ধে আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৪৫ হাজার সেনা।
এ ছাড়া ১৯৯০ সালের পর থেকেই রাশিয়ার জনসংখ্যা বাড়ছে না। সবমিলিয়ে ব্যাপক জনবলের সংকটে রয়েছে রাশিয়া। সেই সংকট কাটাতেই রুশ প্রেসিডেন্টের এ ঘোষণা।